ভারতীয় চিকিৎসা সেবা যে বাংলাদেশিদের কাছে ক্রমশ নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠছে তা এই পরিসংখ্যানেই প্রমাণ। গত বছরে মেডিকেল ভিসা নিয়ে ভারতে চিকিৎসা করতে যাওয়া বিদেশীর মধ্যে শতকরা ৫৫ ভাগই বাংলাদেশি।
ভারতের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত তিন বছরে বাংলাদেশ থেকে মেডিকেল ভিসা নিয়ে ভারতে যাওয়া মানুষের সংখ্যা বেড়েছে শতকরা ৮৩ ভাগ। ২০১৫ সালে যেখানে ১ লাখ ২০ হাজার ৩৮৮ জন বাংলাদেশি চিকিৎসা নিতে ভারতে এসেছিলেন সেখানে ২০১৭ সালে সেই সংখ্যাটা বেড়ে হয়েছে ২,২১,৭৫১ জন। অর্থাৎ গত তিন বছরে মেডিকেল ভিসা নিয়ে আসা বাংলাদেশি পর্যটকদের সংখ্যাটা দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০১৫ সালে প্রায় ২.৩৩ লাখ বিদেশি নাগরিক চিকিৎসার জন্য ভারতে এসেছেন সেখানে ২০১৭ সালে চিকিৎসা সুবিধা নিতে ভারতে এসেছেন প্রায় ৪.৯৫ লাখ বিদেশি নাগরিক। ভারতের অভিবাসন দফতরের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতেই এই পরিসংখ্যান তৈরি করেছে দেশটির পর্যটন মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ ছাড়া যেসব দেশ থেকে প্রচুর সংখ্যক মানুষ ভারতে চিকিৎসা করাতে যান তার মধ্যে রয়েছে আফগানিস্তান (৫৫,৬৮১), ইরাক (৪৭,৬৪০), মালদ্বীপ (৪৫,৩৫৫), ওমান (২৮,১৫৭), ইয়েমেন (১১,৯০৩)।
সংখ্যাটা কম হলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি উন্নত দেশগুলি থেকেও মেডিকেল ভিসায় ভারতে আসা পর্যটকদের সংখ্যা বেড়েছে। ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৬১৫ নাগরিক মেডিকেল ভিসায় আসেন সেখানে গত বছর সংখ্যাটা বেড়ে হয়েছে ৬৪৯। যুক্তরাজ্য (৬০৯ থেকে বেড়ে ৭৫৫), ফ্রান্স (৫৬ থেকে বেড়ে ৯৭), জার্মানি (৫২ থেকে বেড়ে ১০৯)।
তবে প্রতিবেশি পাকিস্তান থেকে মেডিকেল ভিসায় আসা নাগরিকদের ভারতে আসার সংখ্যাটা কমেছে। ২০১৫ সালে যেখানে ৩৬৩২ পাকিস্তানি নাগরিক এসেছিল সেখানে গত বছরে আসেন ১৭৮৫ জন।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ভারতের মেডিকেল ট্যুরিজম শিল্পে বেশিরভাগ রোগীই আসেন হার্ট সার্জারি, হাঁটু প্রতিস্থাপন, কসমেটিক সার্জারি এবং দাঁতের চিকিৎসা করাতে। এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর এবং হংকং-এর তুলনায় ভারতে চিকিৎসা খরচ অনেকটাই কম বলে মনে করা হয়।
চিকিৎসার জন্য ভারতের রাজ্যগুলির মধ্যে মহারাষ্ট্র, কেরালা, গোয়া, কর্নাটক এবং গুজরাটকে বেশি পছন্দই বিদেশি নাগরিকদের। মেডিকেল ট্যুরিজমকে জনপ্রিয় করতে ভারত সরকারও পর্যটকদের ভিসার ক্ষেত্রে বেশ কিছুটা শিথিলতা এনেছে।