ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের দুই শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। সেই দুই শিক্ষার্থীর নাম মুমতাহেনা আফরোজ হেনা ও রোকনুজ্জামান রোকন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মুমতাহেনা ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে এবং রাত সাড়ে ৮টার দিকে রোকন ট্রেনের নীচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে জানিয়েছেন প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, মুমতাহেনা আফরোজের সঙ্গে একই বিভাগের ছাত্র রোকনুজ্জামান রোকনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। নিজেদের সম্পর্কে টানাপোড়নের কারণে হেনা নামের ওই ছাত্রী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ঝিনাইদহ শহরের ঝিনুক টাওয়ারের ৫ম তলায় নিজ শয়ন কক্ষে ফ্যানের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। প্রেমিকার আত্মহত্যার কথা শুনে রোকনুজ্জামান রোকনও আত্মহত্যা করে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার মতি মিয়া রেলগেট এলাকায় পোড়াদহ থেকে গোয়ালনন্দগামী ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে।
আত্মহত্যাকারী মুমতাহেনা আফরোজ হেনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্ট্যাডিস বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. আশরাফুল আলমের মেয়ে। তার বাসা সাতক্ষীরা জেলায়। রোকনুজ্জামান রোকনের বাসা চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলায়। রোকন ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের প্রথমস্থানধারী শিক্ষার্থী ছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান জানান, আমি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পরে ছাত্রীর আত্মহত্যার বিষয়টি জানতে পারি। পরে রাত ৯টার দিকে রোকনের বিষয়টি জানতে পারি। ওই দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তবে হঠাৎ করে দুজনই কেন আত্মহুতির সিদ্ধান্ত নিলেন সে বিষয়ে এখনও স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে পোড়াদহ জিআরপি থানার ওসি আব্দুল আজিজ বলেন, ওই ছাত্রের লাশ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রশাসনের শোক প্রকাশ
দুই শিক্ষার্থীর অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারী, সহ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.সেলিম তোহা।
যৌথ শোকবার্তায় তারা বলেন, রোকনুজ্জামান এবং হেনার পরিবারের সাথে আজ আমরাও বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যরা শোকাহত ও ব্যথিত।
তারা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, জীবনে চলার পথে ঘাত-প্রতিঘাত এবং যে কেন সমস্যা আসতেই পারে। কিন্তু আত্মহত্যা কোন সমস্যার সমাধান হতে পারে না। এ ধরনের অকাল মৃত্যু কারও কাম্য নয়। রোকনুজ্জামান এবং হেনা চলে গেছে না ফেরার দেশে কিন্তু তাদের রেখে যাওয়া স্মৃতি পিতা-মাতার পাশাপাশি শিক্ষক হিসেবে আজীবন আমাদেরকে বয়ে বেড়াতে হবে। আমরা মরহুম ও মরহুমার আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।