হঠাৎ করেই ট্রাভেলার্স অফ ঢাকার সুজনের ফোন। সুন্দরবনে ক্যাম্পিং করবেন? শুনেই রোমাঞ্চিত হলাম। বিস্তারিত জানতে চাইতেই বললো- পুতনির দ্বীপ গিয়ে ক্যাম্প করবো। সময় বের করা নিয়ে চিন্তিত থাকলেও। সামসুজ্জামান ভাই এর ফোন পেয়ে রাজী হয়ে গেলাম। প্রাথমিকভাবে ৮ জনের টিম ঠিক হলেও শেষ পর্যন্ত আমরা ২৪ তারিখ সাড়ে দশটার ঈগল পরিবহনে সাতক্ষীরার উদ্দ্যেশে যাত্রা শুরু করলাম ১১জন।
সকাল সাড়ে ৭ টায় সাতক্ষীরা পৌঁছালাম। ফ্রেশ হয়ে ভোজন বিলাস রেঁস্তোরাতে নাস্তা করতেই গাড়ী চলে এলো। চা খেয়ে গাড়ীতে চড়ে বসলাম ৮:৩০ এ। গন্তব্য এবার নীলডুমুর,শ্যামনগর,বুড়ি গোয়ালিনী রেঞ্জ। রাস্তার দুই ধার দেখতে দেখতে একটা ব্যাপার লক্ষ্য করলাম । এখানে অনেক ক্যাকটাস জন্মায়। এখানে বসবাসকারীরা বাড়ীর বেড়া হিসেবে এই ক্যাকটাস গাছ গুলিকেই ব্যবহার করছে।
১০:৩০ মিনিটেই পৌছে গেলাম নীলডুমুর বাজারে। ট্রলারে ব্যাগ রেখে সবাই গেলাম কাছের বাজারে। এডমিন সুজন প্রয়েজনীয় রসদ কেনায় ব্যস্ত হয়ে পড়লো। বাপ্পি ভাই কিনলো আপেল কমলা। সামসুজ্জামান ভাই নিল সফেদা। আরিফ ভাই আর কবির ভাই সারা বাজার ঘুরেও ঢাব আর লেবু পেলনা। আর আমি খুজে পেলাম আদি সাতক্ষীরা ঘোষ ডেযারী। সাদা দই টা সেই রকম মজা ছিল। এখান থেকে দই মিষ্টিও নেয়া হলো।
১১:৪৫ আমাদের ট্রলার ছেরে দিলো। ট্রলার মালিক তমজিদ মল্লিক ভাই। আমাদের নিরাত্তার জন্য সঙ্গে রয়েছে রিয়াজুল ইসলাম ভাই আর আব্দুল্লাহ ভাই। নিয়ে আসা দই দিয়ে সামসুজ্জামান ভাই সেইরকম এক লাচ্ছি বানালো। কমলালেবু দিয়ে বানানো লাচ্ছি এই প্রথম খেলাম। দু পাশ দিয়ে ছুটে চলা সুন্দরবন দেখছি মুগ্ধ চোখে। জানা ছিলনা ক্যানেল গুলি এতো বড়। প্রথম দেখা সব কিছুর মদ্ধ্যেই অন্যরকম এক ভালোলাগা কাজ করে।
দুপুর ২ টার সময় দোবেকী বন টহল ফাড়ীতে একটা ব্রেক দেয়া হলো । আমরা সোজা গিয়ে পুকুরে ঝাঁপিয়ে পরলাম। সারা রাতের যতো ক্লান্তি এক মুহূর্তে দুর হয়ে গেলো। দুপুরের খাবার দেয়া হলো। মেন্যু ভাত, চিংড়ী, মুরগীর মাংস। নৌকায় বসে দুলতে দুলতে খাওয়া অসাধারন এক অনুভূতির জন্ম। খাবার পর শুয়ে বসে প্রকৃতি দেখতে দেখতে বিকেল হয়ে গেলো । রোদ একটু কমতেই হরিন দেখা দিতে লাগলো। কোন হরিন পানি পান করছে । কয়েকটা হরিন ঘাস খাচ্ছে কিছু হরিন তো আমাদেরই দেখছিল। এই রকম সময়ে মনেহয় জীবন সত্যিই সুন্দর।