মাতৃত্বের অনুভূতি প্রাকৃতিক। যে কোনো নারীকে তা পাল্টে দেয়। বদলে যায় ভাবনার জগৎ। সেরেনা উইলিয়ামসের ক্ষেত্রেও এমনটা ঘটেছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে মাতৃত্বের স্বাদ পাওয়ার পর পাল্টে গেছে সেরেনার ভাবনার জগৎ। টেনিস কোর্টে দাপিয়ে খেলার চেয়ে ভালো মা হওয়ার চেষ্টা ভাবাচ্ছে ওপেন যুগে সর্বোচ্চ (২৩) গ্র্যান্ডস্লামজয়ী এ খেলোয়াড়কে। খুব স্বাভাবিকভাবেই ব্যাপারটা তাঁর পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলেছে। ইনস্টাগ্রামে এক আবেগী পোস্টে তা স্বীকার করে নিলেন সেরেনা।কন্যাসন্তানের মা হওয়ার পর এ বছর ফ্রেঞ্চ ওপেন দিয়ে গ্র্যান্ড স্লামে ফেরেন সেরেনা। চতুর্থ রাউন্ডে উঠলেও মাংসপেশিতে চোটের কারণে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। এরপর উইম্বলডনের ফাইনালে উঠলেও শিরোপা জিততে পারেননি। আর সর্বশেষ সিলিকন ভ্যালি ক্লাসিকের প্রথম রাউন্ডেই হেরেছেন জোয়ানা কন্তার কাছে হেরে। ৫২ মিনিটের সেই লড়াইয়ে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে হারই সঙ্গী হয়েছে তাঁর (৬-১, ৬-০)।
মাতৃত্বের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে খেলায় অতটা মনোযোগী হতে পারছেন না, এটাই সেরেনার সেই ইনস্টাগ্রাম পোস্টের সারকথা। সিলিকন ভ্যালিতে হারের প্রসঙ্গ নিয়ে সোমবার নিজের অ্যাকাউন্টে তিনি লেখেন, ‘গত সপ্তাহটা আমার জন্য মোটেও সহজ ছিল না। ব্যক্তিগত কিছু ঝামেলা সামলানোর জন্য নয়, আমি আসলে ভীত ছিলাম। বেশির ভাগ সময়েই মনে হতো আমি বোধ হয় ভালো মা হতে পারিনি।’
ইনস্টাগ্রামে সেরেনার সেই পোস্ট।সেটি ‘পোষ্টপার্টাম ডিপ্রেসন’—প্রসবোত্তর বিষণ্নতা। সদ্যোজাত সন্তানকে নিয়ে ভীষণ ভাবনা-চিন্তার মধ্যে থাকেন মা। তাঁর গড়ন, স্বাস্থ্য, দেখাশোনা নিয়ে ভীষণ চিন্তিত থাকেন। সেরেনাও ভেবেছিলেন তাঁর বুঝি এমন কিছু হয়েছে! ইনস্টাগ্রামে তিনি লিখেছেন, ‘বেশ কিছু লেখায় পড়েছি “পোষ্টপার্টাম” আবেগ ঠিকমতো সামলাতে না পারলে তিন বছর পর্যন্ত থাকতে পারে। এ জন্য মা, বোন, বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা বলেছে আমার অনুভূতিগুলো স্বাভাবিক। সন্তানের ঠিকমতো দেখাশোনা করতে পারছি না, এটা খুবই স্বাভাবিক ভাবনা।’
খেলোয়াড় কিংবা কর্মজীবী মায়েদের তাই সন্তানের দেখাশোনা আর কাজের (খেলাও) মধ্যে ভারসাম্য আনতে হয়। সেরেনা এখনো সেই ভারসাম্যটুকুর সন্ধানে। যেসব মা এ দায়িত্ব দক্ষতার সঙ্গে পালন করছেন তাঁদের ‘সত্যিকারের নায়ক’ তকমা দিয়ে সেরেনার উক্তি, ‘আমি অনেক কাজ করি, অনুশীলন করি, সেরা অ্যাথলেট হওয়ার চেষ্টা করছি। এরপরও তাঁর প্রতিদিনের জীবনে আমি আছি। কিন্তু যতক্ষণ থাকতে চাই তা সম্ভব হয়ে ওঠে না। বেশির ভাগ মায়েদের এর মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। কাজের জন্য বাসার বাইরে থাকুন কিংবা ভেতরে, সন্তানের পাশে থাকার সঙ্গে তার ভারসাম্য আনতে পারাটা সত্যিকারের শিল্প। (যাঁরা এটা পারেন) আপনারাই সত্যিকারের নায়ক।’