ফ্যান বিংবিং। চীনের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক প্রাপ্ত অভিনেত্রী তিনি। উপহার দিয়েছেন বেশ কিছু ব্যবসাসফল সিনেমা। কিন্তু রেড কার্পেটে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ উধাও হয়ে গেছেন এ অভিনেত্রী! আর এরপর তিনি কোথায় আছেন তা এখনো জানা যায়নি। এমনই অদ্ভূত এক ঘটনা ঘটেছে দেশটিতে।
তবে স্থানীয় গণমাধ্যমে দাবি, কর ফাঁকি দেয়া নিয়ে হৈ চৈ শুরুর পর হঠাৎই নিখোঁজ হয়ে গেছেন তিনি। একই সঙ্গে চীনা এবং হলিউডের চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন বিংবিং। বিখ্যাত হলিউড সিনেমা এক্স-ম্যান সিরিজেও অভিনয় করেছেন তিনি।
একসময় দেশটির হাজার হাজার বিজ্ঞাপনে তাকে দেখা গেছে। তার খ্যাতিকে ব্যবহার করে কার্টিয়ার থেকে লুইস বাটন পর্যন্ত বহু প্রতিষ্ঠান নিজেদের পণ্য বিক্রির সাফল্য তুলেছে। প্রধান প্রধান অ্যাওয়ার্ড শো আর ফ্যাশন অনুষ্ঠানে তাকে নিয়মিতই দেখা যেতো। ২০১৫ সালে টাইম ম্যাগাজিন তাকে চীনের সবচেয়ে জনপ্রিয় অভিনেত্রী হিসেবে অভিহিত করে।
কিন্তু জনপ্রিয় এই অভিনেত্রীকে চলতি বছরের জুনের প্রথম থেকে আর জনসম্মুখে দেখা যাচ্ছে না। সে সময়কার তার ভেরিফাইড ফেসবুক পোস্ট অনুযায়ী তিনি তিব্বতের একটি শিশু হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন।
দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিকিউরিটিস ডেইলি গত ৬ সেপ্টেম্বর তার সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে পরে আবার সেটা তুলে নেয়। তাদের প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে ওই অভিনেত্রীকে বিচারের আওতায় আনার কথা বলা হয়।
এ পর্যন্ত ফ্যান বিংবিং এর হদিস সংক্রান্ত বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তাছাড়া ওই অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে সম্ভাব্য অপরাধের জন্য কোনো মামলাও দায়ের করা হয়নি।
চীন এমন একটা দেশ যেখানে একজন জনপ্রিয় মানুষকেও দেশটির সরকারের অনুগত থাকার জন্য অহিংস পাবলিক প্রোফাইল রাখতে বাধ্য করা হয়। ওই অভিনেত্রী কোথায় আছে সে সম্পর্কে মানুষ এখন নিজেদের মতো করে ভেবে নিচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়ান স্ট্রাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউটের সাইবার বিশেষজ্ঞ ফারগাস রায়ান বলেন, যদি আপনি কোটিপতি হন তাহলে একটা সীমা পর্যন্ত আপনি সবকিছু উপভোগ করতে পারবেন। কিন্তু আপনাকে আপনার সীমা সম্পর্কে সবসময় সচেতন থাকতে হবে। কোন অবস্থাতেই চীনা কমিউনিস্ট পার্টির বিরাগভাজন হওয়া যাবে না।
এর আগে ২০১১ সালে দেশটির বিখ্যাত চিত্রশিল্পী আই উইওয়েই কে প্রায় তিনমাস নিখোঁজ ছিলেন। এসময় তার কোনো হদিসই পাওয়া যায়নি। এরপর তাকে করা ফাঁকি সংক্রান্ত একটি স্বীকারোক্তিতে স্বাক্ষর নেওয়ার মাধ্যমে ছেড়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। জানা যায় প্রকাশ্যে দেশটির সরকারের সমালোচনা করতেন এই চিত্রশিল্পী।