হজরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)কে বিদায় হজে আরাফাতের দিন তাঁর কাসওয়া নামক উষ্ট্রিতে আরোহণ অবস্থায় খুতবা দিতে দেখেছি এবং তাঁকে বলতে শুনেছি, হে লোক সকল! অবশ্যই আমি তোমাদের মাঝে এমন জিনিস রেখে গেলাম, তোমরা তা ধারণ বা অনুসরণ করলে কখনও গোমরাহ হবে না। আল্লাহর কিতাব (আল-কোরআন) এবং আমার ইতরাত অর্থাৎ আমার আহলে বাইত।
-তিরমিযি শরিফ
হজরত যায়েদ ইবনে আকরাম (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) একদিন মক্কা ও মদিনার মধ্যবর্তী ‘খুম্ম’ নামক স্থানে দাঁড়িয়ে আমাদের সামনে ভাষণ দিলেন।
আল্লাহর প্রশংসা ও সানা বর্ণনা শেষে ওয়াজ-নসিহত করলেন। তারপর বললেন, সাবধান, হে লোক সকল! আমি একজন মানুষ আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত ফেরেশতা আসবে, আর আমিও তাঁর ডাকে সাড়া দেব। আমি তোমাদের কাছে ভারী দুটো জিনিস রেখে যাচ্ছি। এর প্রথমটি হল আল্লাহর কিতাব। এতে হিদায়াত এবং নুর রয়েছে।
সুতরাং তোমরা আল্লাহর কিতাবকে অবলম্বন কর, একে শক্ত করে ধরে রেখ। এরপর তিনি কোরআনের প্রতি আগ্রহ ও অনুপ্রেরণা দিলেন। তারপর বলেন, আর দ্বিতীয়টি হল আমার আহলে বাইয়াত। আর আমি আহলে বাইয়াতের ব্যাপারে তোমাদের আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, আহলে বাইয়াতের ব্যাপারে তোমাদের আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, আহলে বাইয়াতের ব্যাপারে তোমাদের আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি।
-মুসলিম শরিফ
হজরত যায়েদ ইবনে আরকাম (রা.) থেকে আরও একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন আমি তোমাদের মাঝে এমন জিনিস রেখে গেলাম যা তোমরা শক্তভাবে ধারণ (অনুসরণ) করলে আমার পর কখনও গোমরাহ হবে না।
তার একটি অপরটির চেয়ে অধিক মর্যাদাপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহর কিতাব যা আসমান থেকে জমিন পর্যন্ত প্রসারিত এবং আমার পরিবার অর্থাৎ আমার আহলে বাইত। এ দুটি কখনও পৃথক হবে না কাওসার নামক ঝর্ণায় আমার সঙ্গে উপস্থিত না হওয়া পর্যন্ত। অতএব লক্ষ্য করা হবে আমার পর এতদভয়ের সঙ্গে তোমরা কিরকম আচরণ কর। (মুসলিম)
-নাহ্জ আল বালাগা-মাওলা আলী
কোরআনের আয়াত থেকেও সুস্পষ্ট যে ‘আল্লাহর কোরআন’ ও নবীর বংশধর- আহলাল বাইতকে আলাদা করা যাবে না।
সূরা আলে ইমরানে বলা হয়েছে- (৩৩) নিশ্চয়ই আল্লাহ আদম, নূহ, ইবরাহিম ও ইমরানের বংশকে মনোনীত করেছেন বিশ্ববাসীদের জন্য (৩৪) তারা পরস্পর বংশধর। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
সূরা হাদিদ : হাদিসে বলা হয়েছে- (২৬) আর আমি নূহ ও ইবরাহিমকে রাসূল করে পাঠিয়েছি তাদের বংশধরের জন্য নবুয়াত ও কিতাব প্রদান করেছি। কিছু পথপ্রাপ্ত কিন্তু অনেকেই পাপাচারী হয়েছে।
সূরা আন’ আ-ম বলছে- (৮৪) আমি ইসহাক ও ইয়াকুবকে দিয়েছি, তাদের প্রত্যেককে সৎপথ দেখিয়েছি, এর পূর্বে নূহকে আমি সৎ পথ দেখিয়েছিলাম, তার বংশে দাউদ, সোলাইমান, আয়ূব, ইউসুফ, মূসা ও হারুনকেও পাঠিয়েছিলাম। এভাবে আমি সৎলোকদের প্রতিদান দিয়ে থাকি।
আয়াতগুলোতে দেখা যাচ্ছে নানা বংশে রাসূল পাঠিয়ে তাদের বংশে নবুয়াত ও কিতাব প্রদান করা হয়েছে।
উল্লেখিত কোরআন সংশ্লিষ্ট রাসূলপাকের হাদিসে বা বাণীতে আল্লাহর কোরআন ও রাসূল পাকের আহলাল বাইতের সংশ্লিষ্টতা সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।
আজকের দুনিয়ায় নানা মাজহাবি ফেরকায় অন্ধ হয়ে মুসলমান আহলাল বাইতকে ভুলতে বসেছে। হে আল্লাহ আমাদের হৃদয়ে আহলাল বাইতের প্রেমবন্ধন জাগ্রত করে দিন।