ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) চলছে আন্তর্জাতিক অটো শো। বিশ্বসেরা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের গাড়ি নিয়ে এসেছে একাধিক প্রতিষ্ঠান। কন্টিনেন্টাল মোটরস নিয়ে এসেছে রেঞ্জ রোভার, পোরশে সিরিজের বিভিন্ন মডেলের গাড়ি। প্রদর্শনী উপলক্ষে বিশেষ ছাড়ে চলছে গাড়ি বিক্রি। তিন দিনব্যাপী প্রদর্শনী শেষ হয়েছে গতকাল।
শেষ দিন প্রদর্শনীতে গিয়ে দেখা গেছে, আধুনিক প্রযুক্তি-সংবলিত মোটরগাড়ি ও মোটরসাইকেলের বিশাল সম্ভার তুলে ধরা হয়েছে ক্রেতা-দর্শনার্থীর সামনে। ক্রেতাদের পাশাপাশি দেশের মোটরশিল্পের উদ্যোক্তারাও স্টলগুলো ঘুরে ঘুরে দেখেছেন। আর আগ্রহীদের মোটর-সংশ্লিষ্ট শিল্পের বিভিন্ন সরঞ্জাম সম্পর্কে ধারণা দিয়েছেন স্টলকর্মীরা। কম মূল্যে গাড়ি কিনতে ইচ্ছুকদের জন্য ব্যাংক ঋণ প্রাপ্তিতে সহযোগিতাও করা হয় মেলায়। এর মধ্যে ব্র্যান্ড নিউ গাড়ি প্রদর্শন করতে এসেছে কন্টিনেন্টাল মোটরস। প্রতিষ্ঠানটি রেঞ্জ রোভার ও পোরশে সিরিজের বিভিন্ন মডেলের গাড়ি প্রদর্শন করেছে। রেঞ্জ রোভার তিনটি মডেল আইসিসিবিতে নিয়ে এসেছে তারা। বিশেষ ছাড় দিয়ে ব্র্যান্ডভেদে একটি গাড়ির দাম রাখা হয়েছে দুই কোটি ৩৫ লাখ টাকা থেকে দুই কোটি ৬৫ লাখ। পোরশে সিরিজের ব্র্যান্ড নিউ গাড়ির দাম রাখা হয়েছে দুই কোটি ৫ লাখ থেকে তিন কোটি ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত। শুধু অর্ডার দিলেই গ্রাহকের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে এই গাড়ি। ব্যাংক ঋণের সুবিধা দিয়ে প্রদর্শনী থেকেই একাধিক গাড়ি বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্টলকর্মীরা। টাটা মোটরস নিয়ে এসেছিল ন্যানো সিরিজের বিভিন্ন মডেলের গাড়ি। ব্যাংক ঋণের সুবিধা দিয়ে বিশেষ ছাড়ে বিক্রি চলেছে মাত্র ৫ থেকে ৬ লাখ টাকায়।
প্রদর্শনীতে গাড়ি ছাড়াও অটো যন্ত্রাংশ, লুব্রিকেন্ট, গাড়ির রংসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে এসেছে বিশ্বখ্যাত কোম্পানিগুলো। জাপান, ফ্রান্স, ইউএই, কোরিয়া, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, ভিয়েতনাম, ভারত, বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অটোমোটিভ, কার, অটো যন্ত্রাংশ শিল্পের খ্যাতনামা শতাধিক প্রতিষ্ঠান এতে অংশগ্রহণ করে। এই মোটর শোতে ছিল ব্র্যান্ড নিউ গাড়ি, বাস, ট্রাক, বাণিজ্যিক পরিবহন, লুব্রিকেন্ট, সিএনজি রূপান্তরসহ অটো যন্ত্রাংশের বিশাল সমাহার।
বাংলাদেশে দ্রুত প্রসারিত অটোমোটিভ ও অটো-কমপোনেন্ট খাতকে বেগবান করার লক্ষ্যে আয়োজিত এই প্রদর্শনীতে ক্রেতা, দর্শক ও উদ্যোক্তারা ব্র্যান্ড নিউ গাড়ি, যন্ত্রাংশ, আনুষঙ্গিক উপকরণ ও নতুন নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হন। প্রদর্শনীটি ছিল মোটর ইন্ডাস্ট্রির জন্য একটি ওয়ান স্টপ প্লাটফর্ম। জানতে চাইলে প্রদর্শনীর আয়োজক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা শরীফ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশে দ্রুত অগ্রসরমাণ অটোমোটিভ ও অটো-কমপোনেন্ট খাতকে বেগবান করতে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। শনিবার ছুটি থাকায় মেলায় ক্রেতা ও দর্শনার্থীর যেন ঢল নেমেছে। গাড়ি কিনতে ইচ্ছুকরাই বেশি এসেছেন। এখানে নিজের পছন্দের গাড়িটি বেছে নেওয়া তাদের জন্য সহজ হয়। এবারের প্রদর্শনীতে ক্রেতা, দর্শক ও উদ্যোক্তারা ব্র্যান্ড নিউ গাড়ি, যন্ত্রাংশ, আনুষঙ্গিক উপকরণ ও নতুন নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।’
একই স্থানে চলে আরও একটি মেলা। লাইভস্টক ফিড নিয়ে আয়োজন করা হয়েছে এ মেলার। আইসিসিবির চতুর্থ নম্বর হলে আয়োজিত প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে বিশ্বের ৩০টির অধিক দেশের প্রতিষ্ঠান। কৃষিনির্ভর শিল্পের জন্য, বিশেষ করে গবাদিপশুর খাদ্য, পোলট্রি শিল্পের জন্য খাদ্য উৎপাদন, ওষুধ নিয়ে আয়োজন করা হয়েছে এ প্রদর্শনীর। এটিও শেষ হয়েছে গতকাল। প্রদর্শনীর শেষ দিন গিয়ে দেখা গেছে শত শত দর্শনার্থীর ভিড়। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছেন উদ্যোক্তারা।