ওয়ানডেতে টানা চার বার পাকিস্তানকে হারালো বাংলাদেশ। বুধবার রাতে আবুধাবিতে ৩৭ রানে জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে মুশফিকুর রহিমের প্রতি পাকিস্তানের এক সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল, পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়টা বিশেষ কিছু কিনা?
মুখের ওপর মুশফিকের জবাবটা যেন ছিল মাঠের বাইরে আরেকটা বাউন্সার। মুশফিক বলেছেন, এটা আর দশটা ম্যাচের মতোই শুধু একটা ম্যাচ। বিশেষ কিছু নয়।
পাঁজরের ব্যথার কারণে টেপ পেঁচিয়ে ব্যাটিং করেছেন মুশফিক। সাকিব-তামিমদের অনুপস্থিতিতে ব্যাটিংয়ের নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। মিঠুনের সঙ্গে গড়েছেন ১৪৪ রানের জুটি। আবুধাবিতে সেঞ্চুরি বঞ্চিত হয়েছেন ১ রানের জন্য। ৯৯ রানে কাটা পড়লেও দল ম্যাচ জেতায় সেঞ্চুরির আক্ষেপ ভুলে গেছেন সাবেক এই অধিনায়ক।
দলটা পূর্ণশক্তির না হলেও মুশফিকের আশা তিন বিভাগে সেরা ক্রিকেট খেললে আজ ফাইনালে ভারতকেও হারাতে পারবে বাংলাদেশ। দলটা পূর্ণ আত্মবিশ্বাসী। ফাইনাল জয়ের স্বপ্ন নিয়েই আজ খেলতে নামবেন ডানহাতি এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। গত বুধবার রাতে ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই বলেছেন মুশফিক।
তার মতে, টুর্নামেন্টে এখনো নিজেদের সেরাটা খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। তিন বিভাগ একসঙ্গে জ্বলে উঠলে ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ভালো সুযোগ দেখছেন মুশফিক। তিনি বলেছেন, ‘অবশ্যই আমরা পারব। আত্মবিশ্বাসের কমতি নেই। আমরা এখনো নিজেদের সেরাটা খেলতে পারিনি। এখনো তিন বিভাগ একসঙ্গে জ্বলে ওঠেনি। টপ অর্ডার ভালো করছে না। এগুলো সব যদি ভারতের বিপক্ষে জ্বলে ওঠে, তাহলে না পারার কারণ নেই। ভারত অবশ্যই অসাধারণ ক্রিকেট খেলছে। কিন্তু ওরাও মানুষ, ওরা ভুল করবে। যদি আগে ব্যাট করি এবং বড় স্কোর গড়তে পারি, শুরুতে ওদের চাপে রাখতে পারলে কিংবা রান তাড়া করলে ভালো শুরু পেলে না পারার কারণ নেই। ভারতের বিপক্ষে আমরা সেটিই করতে চাই।’
এশিয়া কাপের গত চার আসরে তিনবার ফাইনাল খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। উপমহাদেশের বিশ্বকাপ খ্যাত এই টুর্নামেন্ট জয়ের স্বপ্নটা ধারণ করেই এগুচ্ছেন মুশফিক। পাকিস্তানের বিপক্ষে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেওয়া এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার বলেছেন, ‘মানুষ স্বপ্ন ও আশা নিয়েই বাঁচে এবং আমাদের স্বপ্নটাও আছে। এশিয়া কাপের আগে আমাদের লক্ষ্য ছিল যে অন্তত ফাইনাল যেন খেলতে পারি। তার পর ফাইনালে উঠতে পারলে দেখা যাবে, সেরা ক্রিকেট খেললে অবশ্যই পারব। এখন এত কষ্ট করে এত দূর এসেছি, অবশ্যই আমাদের সুযোগ আছে খুব ভালো খেললে ভারতকে হারানোর। আগেও আমরা ওদেরকে হারিয়েছি। এটা ঠিক আমরা ওদের বিপক্ষে ধারাবাহিক ভাবে হয়ত ভালো খেলতে পারিনি। কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে, ওরা বিশ্বের সেরা দুটি দলের একটি। আমরা নিজেদের সেরাটা খেললে ওদের চাপে রাখা সম্ভব এবং জেতা সম্ভব।’
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নার্ভাস নাইনটিজের শিকার হয়ে ক্যারিয়ারের সপ্তম ও এশিয়া কাপের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি মিস করেছেন মুশফিক। তবে দলের জয়ে ভুলে গেছেন ব্যক্তিগত অর্জন হাতছাড়া হওয়ার দুঃখ। তিনি বলেছেন, ‘সত্যি বলতে, জেতার পর থেকেই দুঃখ আর পাচ্ছি না। আমরা কতটা জানেন জানি না, দলই আমার কাছে সবার আগে। আমি যদি সেঞ্চুরি করতাম, দল ২৬০ করে হেরে যেত, ভালো লাগাটা আমার কখনোই আসত না। এটা মুখের কথা নয়, আমার মনের কথা। আমি সবসময়ই এটা অনুভব করি।’