মালদ্বীপের নির্বাচন নিয়ে ভারত-চীনের অলিখিত দ্বৈরথে ভারতের জয় দেখছেন বিশ্লেষকরা। সার্কভুক্ত এ দেশটির নির্বাচনে চীনপন্থি প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিন হেরেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ’র কাছে। সলিহ জয়ী হওয়ার পর প্রশংসা জানাতে চূড়ান্ত ঘোষণা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারেননি নয়া দিল্লির কূটনৈতিকরা।
প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশের পর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়, মালদ্বীপে সফলভাবে সম্পন্ন হওয়া তৃতীয় প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনকে আমরা স্বাগত জানাই। এ নির্বাচনে জয়ী হওয়ায় ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহকে অভিনন্দন।
ভারত মহাসাগরে প্রভাব বজায় রাখতে এ নির্বাচনের ফলাফল ভারতের পাশাপাশি চীনের জন্যও সমান গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই নির্বাচনকে এশিয়ার এ দুই পরাশক্তির মধ্যকার পরোক্ষ যুদ্ধ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। তবে নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেনি বেইজিং।
১৯৭৮ সাল থেকে ২০০৮ পর্যন্ত প্রায় তিন যুগ ধরে মালদ্বীপ মামুন আব্দুল গাইয়ুমের স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থায় পরিচালিত হয়। অবশ্য গাইয়ুমের ভোগবিলাসের সৌজন্যে দেশটির পর্যটন শিল্পের খ্যাতি বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে তার আমলে প্রচণ্ড দুর্নীতিও ঘটতে দেখা যায়। ২০০৮ সালে দেশটির প্রথম সত্যিকারের গণতান্ত্রিক নির্বাচনে গাইয়ুমকে হটিয়ে ক্ষমতায় আসেন সাবেক রাজবন্দি মোহামেদ নাসিদ।
নাসিদ দেশটিতে গণতন্ত্রের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেন এবং ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে শুরু করেন। কিন্তু বিভিন্ন বিতর্কের মুখে ২০১২ সালে নাসিদ পদত্যাগ করতে বাধ্য হন এবং ইয়ামিন ক্ষমতায় থাকাকালে ২০১৫ সালে তাকে আবার কারাগারে পাঠানো হয়।
ইয়ামিনের আমলে ভারতকে মাঠের বাইরে রাখা হলেও শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল রাজনৈতিক পটপরিবর্তনকে কাজে লাগিয়ে মালদ্বীপে নিজেদের প্রভাব ফিরিয়ে আনতে ভারত যে মুখিয়ে আছে সেটা বলে দেওয়া লাগে না। এদিকে নির্বাচনে ‘পরমবন্ধুর’ পরাজয়ে দ্বীপ রাষ্ট্রটির ওপর প্রভাব হারাতে বসা চীন এরপর কি কৌশল অবলম্বন করবে সেটাই দেখবার বিষয়। সূত্র : এশিয়া টাইমস