ইরাকের নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন শিয়া নেতা আদেল আবদুল মাহদি। মঙ্গলবার দেশটির পার্লামেন্ট কুর্দি রাজনৈতিক নেতা বারহাম সালিহকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করে বলে জানিয়েছে। নির্বাচিত হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সালিহ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মাহদির নাম ঘোষণা করেন। এর মাধ্যমে মে মাসে ইরাকে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের পর কয়েক মাস ধরে চলা রাজনৈতিক অচলাবস্থার অবসান হলো।
দায়িত্ব পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে প্রেসিডেন্টকে নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণার সময়সীমা দেওয়া থাকলেও কুর্দি নেতা সালিহ, নির্বাচিত হওয়ার দুই ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যেই শিয়া নেতা আদেল আবদুল মাহদিকে নতুন মন্ত্রীসভা গঠনের আমন্ত্রণ জানান।
মাহদি এর আগে ইরাকের ভাইস প্রেসিডেন্ট, তেলমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীরও দায়িত্ব পালন করেছেন। নিয়ম অনুযায়ী তিনি এখন মন্ত্রীসভা গঠন করে পার্লামেন্টে অনুমোদনের জন্য ৩০ দিনের সময় পাবেন।
তাকে মধ্যপ্রাচ্য-ভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে চার বছরের লড়াইয়ের পর দেশ পুনর্গঠন, জাতিগত ও সম্প্রদায়গত বিরোধের মীমাংসা এবং প্রধান দুই মিত্র দেশ ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষা করে চলার মতো গুরুদায়িত্ব পালন করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনয়ন পাওয়ার পথে মাহদি মে-র নির্বাচনে নিজেদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দাবি করা পরস্পরবিরোধী দুই অংশেরই সমর্থন পেয়েছেন। অংশ দুটির একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন শিয়া নেতা মোকতাদা আল সদর ও বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল-আবাদি।
অন্যটিতে আছেন ইরান সমর্থিত শিয়া আধাসামরিক বাহিনীর নেতা হাদি আল-আমিরি ও আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী নুরি আল-মালিকি। শিয়া নেতা আমিরি ও মালিকিকে ইরাকে ইরানের দুই ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অন্যদিকে আবাদিকে দেখা হয় যুক্তরাষ্ট্রের পছন্দের ব্যক্তি হিসেবে।
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বাহিনী সাদ্দাম হোসেনকে উৎখাত করে ইরাক দখল করার পর থেকে দেশটির ক্ষমতা কাঠামো সুন্নি, শিয়া ও কুর্দি সম্প্রদায়ের মধ্যে ভাগাভাগির রেওয়াজ তৈরি হয়। প্রধানমন্ত্রীই দেশটির সরকার ব্যবস্থায় সবচেয়ে প্রভাবশালী। রেওয়াজ অনুযায়ী ইরাকের প্রধানমন্ত্রী শিয়া আরবদের মধ্যে থেকে নির্বাচিত হন, স্পিকার হন সুন্নি সম্প্রদায়ের। -রয়টার্স