বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা বলেছেন, ‘কারো দয়া বা সহযোগিতায় প্রধান বিচারপতি হইনি। কিংবা অন্য কোন কারণেও এ পদে অধিষ্ঠিত করা হয়নি। নিজ গুণেই হয়েছিলাম।’
গত রবিবার বিশ্বখ্যাত হার্ভার্ডের হিলেল ব্যারেন অডিটরিয়ামে নিজের লেখা ‘এ ব্রোকেন ড্রিম’ গ্রন্থের ওপর এক আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনাকারী সাবেক এই বিচারপতি আরও অভিযোগ করেন, ‘বর্তমান সরকার জনগণের স্বার্থে কোন কাজ করে না। তারা চাটুকারবেষ্টিত। চোর-ডাকাতদের সুবিধা দেয়। নিজ দলে থাকলে সবঠিক, বিপক্ষে গেলেই শত্রু।’
‘জনগণের কল্যাণে আমার অনেক সুপারিশ ছিল। কিন্তু সরকার তা গ্রহণ করেনি। এমনকি সরকারের ওপর মহল থেকে আমাকে চাপ দেয়া হতো ক্রিমিনালদের ছেড়ে দিতে। এভাবেই বাংলাদেশে বিচারের নামে মকারি চলছে’, অভিযোগ এস কে সিনহার।
এস কে সিনহা বঙ্গভবনকে ‘ব্যাংক ভবন’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে।’ এক পর্যায়ে তিনি উল্লেখ করেন যে, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেত মহিউদ্দিন খান আলমগীরকেও ফারমার্স ব্যাংকের লুটপাটের দায় থেকে অব্যাহতি প্রদানের জন্য চাপ দেয়া হয়েছিল।
সামনের জাতীয় নির্বাচনে বিদেশি কোন শক্তি যাতে বর্তমান সরকারকে সহযোগিতা না করে সে আহ্বানও জানান এস কে সিনহা।
নিউ ইংল্যান্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও বস্টন চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি সোহরাব হোসেন সরকারের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় এ আলোচনার সঞ্চালনা করেন ম্যারিল্যান্ড থেকে আসা কমিউনিটি এ্যাক্টিভিস্ট আনিস আহমেদ। অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বস্টন সিটির কাউন্সিলম্যান টিটু জ্যাকসন।
আয়োজকরা জানান, বিশেষভাবে তালিকাভুক্ত ৪০ জনের মতো প্রবাসীর এ অনুষ্ঠানে ভার্জিনিয়া থেকে এসেছিলেন তারেক রহমানের শ্যালক ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির একাংশের নেতা শরাফত হোসেন বাবু, নিউইয়র্কের ঠিকানা পত্রিকার সিইও ও প্রেসিডেন্ট সাঈদ-উর রব, বিএনপি নেতা মার্শাল মুরাদ এবং কানাডা থেকে ড. আবিদ বাহার।
বহুল আলোচিত/সমালোচিত এই গ্রন্থের প্রথম আলোচনা হয় ওয়াশিংটন ডিসিতে ন্যাশনাল প্রেসক্লাবের একটি কক্ষে। সেখানে এস কে সিনহা বলেন যে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের অভিপ্রায়ে এসাইলাম প্রার্থনা করেছেন। সেটি এখন পর্যন্ত বিবেচনাধীন রয়েছে।
এস কে সিনহা বসবাস করছেন নিউজার্সিতে বাংলাদেশি অধ্যুষিত প্যাটারসন সিটিতে ভাইয়ের কেনা একটি বাসায়।
বস্টনের এই আলোচনার পর ক্রেতাদের অটোগ্রাফ দেন এস কে সিনহা।