ফ্রান্সের কাছে হারের পর তাই ক্ষুব্ধ ১৯৮৬ বিশ্বকাপজয়ী নায়ক। কোচ হোর্হে সাম্পাওলির কট্টর সমালোচক তিনি। সাম্পাওলির দল যে মুখ থুবড়ে পড়বে নিশ্চিতই ছিলেন ম্যারাডোনা। সেটা দ্বিতীয় রাউন্ডে হওয়ার পর আর্জেন্টিনার একটি টিভি চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানালেন, আগেই ঘোষণা হওয়া একটা মৃত্যুর মঞ্চায়ন এটা, ‘মাঠের চেয়ে বেশি করে সিনেমা দেখতে এসেছিলাম বলে মনে হচ্ছে। কারণ আগেই ঘোষণা হওয়া একটা মৃত্যু দেখলাম যেন। আর সেটাই হয়েছে।’চার চারটি বিশ্বকাপ খেলেও ব্যর্থ মেসি। দলের যেখানে বেশি প্রয়োজন সেই নক আউটে গোল নেই তাঁর। অথচ আর্জেন্টিনার স্বপ্ন আবর্তিত হয়েছে তাঁকে ঘিরে। পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে, এই বিশ্বকাপে চার ম্যাচে ১৮টি শট নিয়েছেন মেসি, লক্ষ্যে ছিল মাত্র ছয়টি। ফ্রান্সের বিপক্ষে নিয়েছিলেন তিনটি শট। মাঠে যতটুকু সময় ছিলেন এর ৫৮ শতাংশ কাটিয়েছেন হেঁটে। মেসিকে তাই আর্জেন্টাইন কমিক চরিত্র ‘পাতোরুসু’র সঙ্গে তুলনা করলেন ম্যারাডোনা, ‘মেসিকে খুব ভালোভাবে খেয়াল করেছি। ও গোল থেকে অনেক দূরে ছিল। হ্যাঁ ফলস নাইন ছিল ও, কিন্তু দলকে তো একসুতায় মেসিকেই গাঁথতে হবে। আমরা বরং মেসির চেয়ে বেশি কথা বলছি পাতোরুসুকে নিয়ে। এমবাপ্পে ছেলেটা মুগ্ধ করল। ওকে দেখে তরুণ ক্যানিজিয়ার কথাই মনে হয়েছে আমার।’
মেসির সমালোচনা করলেও তিনিই যে দলটির নিউক্লিয়াস স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন ম্যারাডোনা। মেসি থাকলে দল একরকম আর না থাকলে যে বিবর্ণ মেনে নিলেন ম্যারাডোনা, ‘মাঝমাঠেই ফ্রান্স আটকে রাখল মেসিকে। ফরাসিদের (ডিফেন্ডার) এড়িয়ে যেতে পারেনি ও। তবে এটা ঠিক মেসি না থাকলে আমরা আর দশটা দলের মতোই সাধারণ একটা দল।’
দুই ফরোয়ার্ড নিয়ে রাশিয়া এসেছিলেন কোচ হোর্হে সাম্পাওলি। অথচ গনসালো হিগুইয়ান ও সের্হিয়ো আগুয়েরোকে বেঞ্চে বসিয়ে রেখেছিলেন তিনি। দুজনকে বসিয়ে রাখাটা মানতে পারছেন না ম্যারাডোনা, ‘মেসি, পাভন, দি মারিয়াদের কাজ ছিল বিপক্ষের রক্ষণ তছনছ করে আক্রমণ করা। অবশ্যই আক্রমণ করতে পারে ওরা। কিন্তু এই তিনজন ফরোয়ার্ড নয়। আপনার দলের দুই ফরোয়ার্ডকে বেঞ্চে বসিয়ে রাখার মানেটা কী?’
দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বিদায়ের পর অবসর নিয়েছেন হাভিয়ের মাসচেরানো ও লুকাস বিলিয়া। দলের অর্ধেক খেলোয়াড়ের বয়স ৩০-এর বেশি বলে অবসর নিতে পারেন আরো অনেকে। ম্যারাডোনাও চান নতুনদের নিয়ে আর্জেন্টিনা যেন শুরু করে নতুনভাবে, ‘এখন সময় নতুনদের নিয়ে শুরু করার। তরুণদের নিয়ে শুরু করতে হবে নতুন করে।