ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পুলিশি হেফাজতে এক শিক্ষককে হত্যা করার পর নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন কয়েকশ বিক্ষোভকারী। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।-খবর আল জাজিরার।
নিহত ২৯ বছর বয়সী রিজওয়ান আসাদ পানডিট ছিলেন রসায়নের শিক্ষক। সন্ত্রাসী মামলার তদন্তের সময় তাকে আটক করা হয়েছিল। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে পুলিশ জানায়, তাদের হেফাজতে ওই শিক্ষক নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে তদন্ত চলছে।
কিন্তু রিজওয়ানের পরিবারের অভিযোগ, তাকে ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করা হয়েছে।
তার ভাই মুসাব্বির আসাদ বলেন, রোববার রাতে আওয়ান্তিপোরা গ্রামের বাড়ি থেকে রিজওয়ানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে ছেড়ে দেয়া হবে বলে আমাদের জানানো হয়েছিল। আমার ভাই কোনো তৎপরতায় জড়িত ছিল না। তাকে ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করা হয়েছে।
গত ফেব্রুয়ারিতে এক আত্মঘাতী হামলায় ভারতীয় একটি আধাসামরিক বাহিনীর ৪৪ জওয়ান নিহত হওয়ার পর কাশ্মীরে উত্তেজনা চলছে। পাকিস্তানভিত্তিক জইশ-ই-মোহাম্মদ হামলার দায় স্বীকার করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, পুলওয়ামা হামলার ঘটনায় এই রসায়ন শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তিনি বিস্ফোরক বানাতে পারেন বলে আমাদের কাছে তথ্য ছিল। এ ছাড়া সাম্প্রতিক হামলায় তার ভূমিকা ছিল সন্দেহজনক।
রিজওয়ানের নিহতের ঘটনায় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে হরতাল ডেকেছে। সর্বদলীয় হুররিয়াত পার্টির নেতা মিরওয়াইজ উমর ফারুক এক টুইট পোস্টে বলেন, কারা হেফাজতে এ নিমর্ম হত্যাকাণ্ড আমাদের কাশ্মীরিদের অসহায়ত্ব, ঝুঁকি এবং জীবনের অনিরাপত্তার বিষয়টিও ফুটে উঠেছে।
তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে নিরাপত্তা বাহিনীকে দায়মুক্তি দেয়ায় কাশ্মীরিদের অনিশ্চয়তা আরও বাড়ছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, ১৯৮৯ সালের সশস্ত্র বিদ্রোহের পর থেকে শতশত লোক কারা হেফাজতে নিহত হয়েছেন। যদিও নিহতদের সংখ্যা নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য নেই। কিন্তু এ ধরনের মৃত্যু নিয়ে কাউকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হয়নি।
মানবাধিকারকর্মী খুররাম পারভেজ বলেন, সম্প্রতি বছরগুলোতে কারা হেফাজতের মৃত্যুর ঘটনা কমে গিয়েছিল। গত তিন দশকে ৭০ হাজার মানুষকে হত্যার তালিকায় রিজওয়ানের নাম নতুন যোগ হয়েছে। এ ছাড়া আট হাজার গুম ও অজস্র লোক নির্যাতন এবং যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন।