দুই ম্যাচের পরেই বুঝি মেসি-মাচেরানোরা বুঝতে পেরেছিলেন, কোচ হোর্হে সাম্পাওলির দলকে জেতানোর মতো সেই মানসিকতাই নেই। এ কারণেই বুঝি দ্বিতীয় ম্যাচের পরেই খবর রটেছিল, কোচের সঙ্গে মনোমালিন্য হয়েছে মেসিদের, কোচের কথা আর শুনছেন না তাঁরা। যা রটে, তা কিছু হলেও যে বটে, এটা বোঝা যাচ্ছে আর্জেন্টিনা বাদ পড়ে যাওয়ার পর।কী কী ভুল ছিল সাম্পাওলির? আসুন, দেখে নেওয়া যাক!
নিয়মিত এনজো পেরেজকে খেলানো
বিশ্বকাপের জন্য ঘোষিত মূল তেইশ সদস্যের দলে ছিলেন ম্যানুয়েল লানজিনি। পরে চোটের কারণে দল থেকে ছিটকে যান তিনি, তাঁর জায়গাতেই দলে আসেন রিভারপ্লেটের মিডফিল্ডার এনজো পেরেজ। এই এনজো পেরেজকেই প্রতিটা ম্যাচেই খেলিয়ে গেছেন সাম্পাওলি। প্রশ্ন হলো, এনজো পেরেজের ওপর এত নির্ভর করতে হলে প্রথমেই কেন তাঁকে স্কোয়াডে রাখেননি সাম্পাওলি?
লো সেলসোকে না খেলানো
বিশ্বকাপের আগে প্রতিটি প্রস্তুতি ম্যাচ ও বাছাইপর্বের বেশ কয়েকটা ম্যাচেই খেলানো হয়েছিল পিএসজির প্রতিভাবান মিডফিল্ডার জিওভান্নি লো সেলসোকে। মনে করা হচ্ছিল, বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার মূল একাদশের অবিচ্ছেদ্য অংশই হয়তো হতে যাচ্ছেন সেলসো। অথচ সেই মিডফিল্ডারই বিশ্বকাপ শুরুর পর একটা ম্যাচেও দলে জায়গা পেলেন না। কেন হলো এমন?
মেসির সদ্ব্যবহার করতে না পারা
চারটা ম্যাচের প্রতিটিতে মেসিকে চারটা পজিশনে খেলিয়েছেন সাম্পাওলি। পুরো টুর্নামেন্টেই এ রকম মেসিকে নিয়ে হতোদ্যম অবস্থায় ছিলেন তিনি। কীভাবে খেলালে মেসির সর্বোচ্চ উপযোগিতা পাওয়া যায়, পুরো টুর্নামেন্টেই এই ধাঁধার সমাধান করতে পারেননি সাম্পাওলি।
শক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার না করা
দেশে বসে আছেন মাউরো ইকার্দির মতো স্ট্রাইকার, রাশিয়ার জেনিতে কয়েক বছর খেলে রাশিয়ার ফুটবল সম্পর্কে আগেই ওয়াকিবহাল ছিলেন লিয়ান্দ্রো পারেদেস, এজেকুইল গ্যারেরা। তাঁদেরকে মূল স্কোয়াডে ডাকেননি সাম্পাওলি। পাওলো দিবালার মতো স্ট্রাইকার বেঞ্চে বসে থেকে থেকে নিজের সুযোগের জন্য অপেক্ষা করেই গেছেন, করেই গেছেন। তা-ও এদের মাঠে নামানোর প্রয়োজন বোধ করেননি সাম্পাওলি।
প্রতি ম্যাচে ভিন্ন ছকে খেলানো
কোনো একটা স্টাইল বা দর্শনে দলকে খেলাতে পারেননি সাম্পাওলি। প্রতিটি ম্যাচে ভিন্ন ভিন্ন ছকে খেলিয়েছেন দলকে। খেলোয়াড়েরাও পড়ে গেছেন ধন্দে।
রক্ষণভাগে প্রতিভার ঘাটতি
দানি কারভাহাল, জর্ডি আলবা, মার্সেলো, টমাস মনিয়েরদের মতো প্রতিভাবান ফুলব্যাকদের সঙ্গে মারকাদো, সালভিও, আকুনিয়া—এঁদের মেলানো যায় না। কারণ, মারকাদোরা প্রতিভার দিক দিয়ে একজন আদর্শ ফুলব্যাকের চেয়ে যোজন-যোজন পিছিয়ে। দলে আদর্শ রাইটব্যাক ও লেফটব্যাক নেই দেখেই ক্লাব জীবনে উইঙ্গার হিসেবে খেলা আকুনিয়া, সালভিওদের ফুলব্যাক বানিয়ে খেলিয়েছেন সালভিও। যার মাশুল গুনেছে আর্জেন্টিনা।