ফাইল ছবি
বিশ্ব পানি দিবস আজ শুক্রবার (২২ মার্চ)। বিশ্বের অন্য দেশের মতো এর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে বাংলাদেশে দিবসটি পালনের জন্য সরকারি-বেসরকারিভাবে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে সাপ্তাহিক বন্ধের কারণে আজ বাংলদেশে দিবসটি আনুষ্ঠানিকভাবে পালিত হবে না। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী ১১ এপ্রিল দিবসটি পালিত হবে।
এবারের পানি দিবসের প্রতিপাদ্য ধরা হয়েছে ‘পানির মৌলিক অধিকার থেকে কাউকে বঞ্চিত করা যাবে না।’ দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
এদিকে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) তথ্যমতে, দেশের ৪১ জেলার ১৯২ উপজেলায় দেখা দিয়েছে তীব্র পানি সংকট। রাজধানী ঢাকায় পানির স্তর ভূপৃষ্ঠ থেকে গড়ে ২১২ ফুট নিচে চলে গেছে। যে কারণে ভবিষ্যতে এখানকার পানিতে সমুদ্রের লবণানক্ততা পাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ওয়াটার এইড জানাচ্ছে, সুপেয় পানি পাচ্ছেন না দেশের প্রায় আড়াই কোটি মানুষ। উপকূলীয় অঞ্চলে এখনই ১০ কিলোমিটার দূর থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে। দেশের অধিকাংশ এলাকায়ই শুরু হয়েছে মরুকরণ প্রক্রিয়া। কারণ পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে।
বিএডিসির 'গ্রাউন্ড ওয়াটার জোনিং ম্যাপ' অনুযায়ী, চলতি শুস্ক মৌসুমে বাংলাদেশে প্রায় পাঁচ লাখ অগভীর নলকূপ অকেজো হয়ে পড়েছে। দেশে বর্তমানে ১৭ লাখ শ্যালো টিউবওয়েল মাটির নিচ থেকে পানি তুলছে। এগুলো ২২ থেকে ২৪ ফুট মাটির নিচ থেকেও পানি তুলতে পারে। কিন্তু এখন অনেক এলাকায় মাটির ২৪ ফুট নিচেও পানি পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় সেসব স্থানের কৃষক আরও পাঁচ ফুট মাটি গর্ত করে শ্যালো টিউবওয়েল বসাচ্ছেন। তার পরও অনেক জায়গায় পানি পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি গভীর নলকূপেও অনেক স্থানে ঠিকমতো পানি মিলছে না। মহুরি সেচ প্রকল্প, জিকে প্রকল্প, বরেন্দ্র সেচ প্রকল্প এবং মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প পানির অভাবে বন্ধ হওয়ার পথে।
গত ৩৫ বছর ধরে বাংলাদেশের পানি নিয়ে গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান এনজিও ফোরাম ফর পাবলিক হেলথের তথ্য মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক প্রভাবে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়া, বৃষ্টির পরিমাণ কমে যাওয়া, নদী শুকিয়ে যাওয়া ইত্যাদি প্রক্রিয়ায় সেচের পানির পাশাপাশি সুপেয় পানির পরিমাণও কমতে শুরু করেছে। আশঙ্কাজনকভাবে ঢাকার পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। ঢাকা ওয়াসার তথ্য মতে, রাজধানীবাসীর ব্যবহূত পানির ৮৬ ভাগই ভূগর্ভস্থ পানি। মাত্র ১৪ ভাগ পানি উপরিভাগের।