অনেক পুরানো একটি প্রবাদ আছে, কারো পৌষ মাস-কারো সর্বনাশ। তার প্রমাণ মিলল গুলশান-১ এর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মার্কেটে লাগা আগুনে। আগুনে ওই মার্কেটের দুই শতাধিক দোকান পুড়ে গেছে। পোড়া দোকানের ছাই বুকে নিয়ে কাঁদছেন ক্ষতিগ্রস্থ দোকান মালিকরা। তাদের সান্ত্বনা দিচ্ছেন পরিচিত আত্নীয়স্বজনরা।কিন্তু কিছু মানুষ ব্যস্ত রয়েছে নিজেদের স্বার্থে ও পেট পুরতে। সুযোগসন্ধানী মানুষদের অনেকেই দেখার ছলে পোড়া মার্কেটে প্রবেশ করেছেন। তারা পুড়ে যাওয়া জিনিস থেকে ভালো কিছু নিতে সটকে পড়ার ধান্দায় ব্যস্ত। অবশ্য পুলিশ তৎপরতায় সফল হতে পারছে না তারা।
আজ শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে পুড়ে যাওয়া এক ডিমের দোকান থেকে পোড়া ডিম কুড়াতে দেখা গেছে অনেক মানুষকে। কেউ কেউ ডিম পকেটে ভরে চলে যাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ সেখানে দাঁড়িয়েই একের পর এক পোড়া সিদ্ধ ডিম খাচ্ছেন।
ক্ষতিগ্রস্থ দোকান মালিকের অনুমতি ছাড়া ডিম খাচ্ছেন কেন- জানতে চাইলে এক ব্যক্তি বলেন,‘ভাই দোকানওয়ালার তো সব গেছেই। এখন এই পোড়া ডিম নষ্ট হচ্ছে তাই খেয়ে নিচ্ছি।’ একই প্রশ্ন অপর এক ব্যক্তিকে করায় রেগে যান তিনি।
ডিএনসিসি মার্কেটে আগুনে পোড়া দোকানের মধ্যে আছে বুনিয়াদি, কাঁচামাল, চালের দোকান সহ অনেকে নিত্যপণ্যের দোকান। আগুন সবই পুড়ে ছাই বানিয়ে দিয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর পোড়া ছাইয়ে শেষ সম্বল টুকি খোঁজার চেষ্টা করেছেন দোকান মালিকেরা।
বেলা ১১ টার পরে থেকে নিজ নিজ দোকানে প্রবেশ করে শুধু ছাই ছাড়া আর কিছুই মিলছে না তাদের ভাগ্যে। কেউ কেউ ছাইয়ের মধ্যে পড়ে থাকা সামান্য জিনিসপত্র কুড়িয়ে নিচ্ছেন। কেউ কেউ আবার কুড়িয়ে নেওয়ার মতোও কিছু পাচ্ছেন না। তাই পোড়া ছাইয়ের ওপরে বসে কান্নাকাটি করেছেন অনেক দোকানি।
একই অবস্থা মার্কেটের পুরে যাওায়া প্রায় সকল দোকানির। শনিবার সকাল পৌনে ৬টার দিকে এ আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট কাজ করে। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী। সবার সম্মিলিত চেষ্টায় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আগুন পুরোপুরি নিভিয়ে ফেলা সম্ভব হয়।
এর আগে ২০১৭ সালের ৩ জানুয়ারি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়েছিল গুলশান ১ নম্বর ডিএনসিসি মার্কেট। তখন দোতলা মূল বিপণি বিতানের পাশের কাঁচাবাজারও সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছিল। তারপর ওই বাজারটি নতুন করে গড়ে তোলার দুই বছরের মধ্যে আবার তা পুড়ে গেল।