হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত
পাকিস্তানে আটক ভারতীয় বিমান বাহিনীর উইং কমান্ডারকে ফেরত দেয়া মানেই ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার শেষ না-এমনটাই মনে করেছিল আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।
তারা বলেন-এই ঘটনা দুদেশের উত্তেজনা প্রশমনের সাময়িক ব্যবস্থা বা শান্তির একটা বার্তা মাত্র। বিশ্লেষকরা বলেছিলেন ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার স্থায়ী সমাধানে প্রয়োজন কাশ্মির ইস্যু ও জঙ্গিবাদ প্রশ্নে কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক সংলাপ। আর সেটা না হলে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক দিন দিন অবনতির দিকেই যাবে।
বাস্তবেও সেটাই হচ্ছে। দুই দেশের সীমান্ত উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হলেও থেমে থেমে হামলা পাল্টা হামলা চলছেই। অবশ্য শুরু থেকেই পাকিস্তানের কাছে ধরাশায়ী হওয়া ভারত আবারো বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
সূত্রে জানা যায়, পাক-ভারত উত্তেজনার সময় পাকিস্তানের যুদ্ধবিমান ভেবে নিজেদের হেলিকপ্টারে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ভূপাতিত করেছে ভারতীয় বিমান বাহিনী। ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে নিজেদের হেলিকপ্টার উড়িয়ে দেয়ার এ ঘটনায় প্রাণ যায় এক বেসামরিক-সহ ভারতীয় বিমানবাহিনীর ৬ কর্মকর্তার। গত মাসে পাক-ভারত উত্তেজনার এক মাস পর ভারতীয় দৈনিক ইকোনমিক টাইমস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দিয়েছে।
ওই ঘটনার এক মাস পর ভারত দাবি করেছে, আকাশসীমা লঙ্ঘন করে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করেছিল ২৫টি পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান। এ সময় প্রতিরক্ষামূলক একটি ক্ষেপণাস্ত্র পাক যুদ্ধবিমান লক্ষ্য করে ছোড়া হয়। কিন্তু টার্গেট মিস করে এই ক্ষেপণাস্ত্র গিয়ে আঘাত হানে ভারতীয় হেলিকপ্টারে।
ইকোনমিক টাইমস বলছে, রুটিন মিশনের সময় এমআই-১৭ ভি৫ একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার কিছুক্ষণ আগে ওই ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল ভারতীয় বিমানবাহিনী। এতে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে, ভারত ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে দুর্ঘটনাবশত নিজেদের হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত করেছে।
বিধ্বস্তের এ ঘটনায় ভারতীয় বিমানবাহিনীর অন্তত ৬ কর্মকর্তার প্রাণহানি ঘটে। এছাড়া হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষের আঘাতে দেশটির একজন বেসামরিক নাগিরকও নিহত হন।
ইকোনমিক টাইমস আরো বলছে, হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্তের চূড়ান্ত মুহূর্তে আইএফএফ (আইডেন্টিটি, ফ্রেন্ড অথবা ফো) সিস্টেমের সুইচ অন আছে কি-না তা অত্যন্ত সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়। তবে খুব কম উচ্চতায় উড়তে থাকা মনুষ্যবিহীন অ্যাটাক ভেহিক্যাল টার্গেট করা হলেও তা ভুলে লক্ষচ্যুত হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার সময় তারা আকাশে প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন।
১৭ মিলিয়ন ডলারের শক্তিশালী এমআই-১৭ ভি৫ হেলিকপ্টারটিতে কোনো ধরনের গুরুতর যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল না। কপ্টারটির সরঞ্জামাদিও মোটামুটি নতুন। ২০১২ সালে ভারতীয় বিমানবাহিনীর বহরে রাশিয়ার তৈরি এ হেলিকপ্টার যুক্ত হয়।