প্রতীকি ছবি
পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে রোববার পাঁচ বিভাগের ২২ জেলার ১০৭টি উপজেলায় ভোট হয়। কিন্তু আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে রাখার অভিযোগে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার পুরো নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। রোববার বিকেল ৪টায় ভোটগ্রহণ শেষে গণনা শুরু হয়। এরপর একে একে বিভিন্ন উপজেলার ফলাফল ঘোষণা করেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা।
এর মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের ৪০ জন প্রার্থী বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এর আগে এই চতুর্থ ধাপে বিনা ভোটে দলটির ৪১ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। অন্যদিকে দলের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছেন ২৫ জন। আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর দল জেপির বাইসাইকেল প্রতীক নিয়ে একজন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এ ছাড়া রাত ১টা পর্যন্ত ১৪টি উপজেলার ফল পাওয়া যায়নি।
ভোটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান হলেন যারা
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে আবদুল লতিফ প্রধান, মুন্সীগঞ্জ সদরে আনিছউজ্জামান আনিছ, কক্সবাজার সদরে কায়সারুল হক জুয়েল, নরসিংদী সদরে সফর আলী ভূঁইয়া, ভোলার লালমোহনে গিয়াসউদ্দিন আহমেদ ও ফেনী সদরে আবদুর রহমান;
পটুয়াখালী সদরে গোলাম সরোয়ার, কলাপাড়ায় এস এম রাকিবুল আহসান, গলাচিপায় মো. শাহিন শাহ, দশমিনায় আবদুল আজিজ, দুমকিতে অ্যাডভোকেট হারুন অর রশিদ হাওলাদার, মির্জাগঞ্জে আবু বক্কর ও বাউফলে আবদুল মোতালেব হাওলাদার;
বরগুনার বামনায় মো. সাইতুল ইসলাম লিটু মৃধা ও বেতাগীতে মাকসুদুর রহমান ফোরকান; পিরোজপুর সদরে মজিবুর রহমান খালেক, নাজিরপুরে অমূল্য রঞ্জন হালদার ও ইন্দুরকানীতে এম. মতিউর রহমান;
যশোরের চৌগাছায় মো. মোস্তানিসুর রহমান, অভয়নগরে শাহ ফরিদুজ্জামান ও মণিরামপুরে নাজমা খানম; খুলনার রুপসায় কামাল উদ্দিন বাদশা ও পাইকগাছায় গাজী মোহাম্মদ আলী;
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে শাহে আলম বাচ্চু, ফকিরহাটে স্বপন কুমার দাস ও মোল্লাহাটে শাহীনুর আলম সানা;
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে মাহমুদুল হক সায়েম, ফুলপুরে আতাউল করিম রাসেল ও ঈশ্বরগঞ্জে মাহমুদ হাসান সুমন;
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে মুজাহিদুর রহমান হেলু ও রূপগঞ্জে শাজাহান ভূঁইয়া;
টাঙ্গাইল সদরে শাজাহান আনসারী, ঘাটাইলে শহীদুল ইসলাম লেবু, সখিপুরে জুলফিকার হায়দার কামাল, ভূয়াপুরে মো. আব্দুল হালিম ও মির্জাপুরে মীর এনায়েত হোসেন মন্টু;
কুমিল্লার হোমনায় রেহানা মজিদ ও মুরাদনগরে আহসানুল হক সরকার;
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে মো. হানিফ মুন্সী ও নাসিরনগরে ডা. রফিউদ্দিন আহমেদ চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন।
স্বতন্ত্র হিসেবে যারা জিতলেন
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জিতেছেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে গোলাম রব্বানী, ভোলার তজুমদ্দিনে মোশারেফ হোসেন দুলাল, বরগুনা সদরে মো. মনিরুল ইসলাম মনির, আমতলীতে আলহাজ গোলাম সরোয়ার ফোরকান ও পাথরঘাটায় মোস্তফা গোলাম কবির; পিরোজপুরের নেছারাবাদে আলহাজ আবদুল হক; যশোরের বাঘারপাড়ায় নাজমুল ইসলাম কাজল, কেশবপুরে কাজী রফিকুল ইসলাম ও ঝিকরগাছায় মনিরুল ইসলাম; খুলনার তেরখাদায় মো. শহীদুল ইসলাম, কয়রায় এস এম শফিকুল ইসলাম, দাকোপে মুনসুর আলী খান ও দিঘলিয়ায় শেখ মারুফুল ইসলাম; কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় মুহাম্মদ আবু তাহের ও বুড়িচংয়ে আখলাক হায়দার; ময়মনসিংহের গৌরীপুরে মোফাজ্জল হোসেন, নান্দাইলে হাসান মাহমুদ জুয়েল, মুক্তাগাছায় আবদুল হাই আকন্দ ও ধোবাউড়ায় ডেভিড রানা; ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে ফিরোজুর রহমান ওলিও ও সরাইলে রফিক উদ্দিন ঠাকুর ; টাঙ্গাইলের বাসাইলে কাজী অলীদ ইসলাম, দেলদুয়ারে মাহমুদুল হাসান, কালিহাতীতে আনছার আলী ও নাগরপুরে আব্দুস সামাদ দুলাল।
বাইসাইকেল নিয়ে জয়
পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন আবু সাঈদ মিয়া। তিনি আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর দল জেপির বাইসাইকেল প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
বিনা ভোটে আওয়ামী লীগের ৪১ জন চেয়ারম্যান নির্বাচিত
ভোলা সদরে মোশারফ হোসেন, চরফ্যাশনে জয়নাল আবেদীন আকন, মনপুরায় সেলিনা আক্তার ও দৌলতখানে মঞ্জুরুল আলম খান; পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় মিরাজুল ইসলাম; যশোর সদরে শাহীন চাকলাদার ও শার্শায় সিরাজুল হক মঞ্জু; খুলনার ফুলতলায় শেখ আকরাম হোসেন ও বটিয়াঘাটায় আশরাফুল আলম খান; বাগেরহাট সদরে সরদার নাসির উদ্দিন, মোংলায় আবু তাহের হাওলাদার, চিতলমারীতে অশোক কুমার বড়াল, কচুয়ায় এস এম মাহফুজুর রহমান, রামপালে শেখ মোয়াজ্জেম হোসেন ও শরণখোলায় কামাল উদ্দিন আকন; ময়মনসিংহ সদরে আশরাফ হোসাইন, গফরগাঁওয়ে আশরাফ উদ্দিন বাদল ও ফুলবাড়ীয়ায় মালেক সরকার; ঢাকার সাভারে মঞ্জুরুল আলম রাজীব, কেরানীগঞ্জে শাহীন আহমেদ ও দোহারে আলমগীর হোসেন; টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে হারুন-অর-রশিদ হিরা, মধুপুরে সরোয়ার আলম খান আবু ও গোপালপুরে ইউনুস ইসলাম তালুকদার; কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আব্দুস সোবহান ভুইয়া হাসান, নাঙ্গলকোটে শামসুদ্দিন হায়দার কালু, লাকসামে অ্যাডভোকেট ইউনুস ভূইয়া, মনোহরগঞ্জে মো. জাকির হোসেন ও দেবীদ্বারে জয়নাল আবেদীন; নোয়াখালীর সেনবাগে জাফর আহমেদ চৌধুরী, সোনাইমুড়ীতে খন্দকার রুহুল আমিন, সুবর্ণচরে অধ্যক্ষ খাইরুল আনম সেলিম ও কোম্পানীগঞ্জে সাহাব উদ্দিন; ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় আবুল কাসেম ভূইয়া ও কসবায় অ্যাডভোকেট রাশেদুল কাউসার ভূইয়া জীবন; ফেনীর ফুলগাজীতে আব্দুল আলিম, সোনাগাজীতে জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপ্টন, দাগনভূঞায় দিদারুল কবির রতন, ছাগলনাইয়ায় মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল ও পরশুরামে কামাল উদ্দিন মজুমদার এবং দিনাজপুর সদরে ইমদাদ সরকার।
চলতি পঞ্চম উপজেলা পরিষদের চতুর্থ ধাপে পাঁচ বিভাগের ২২ জেলার ১০৭টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ শুরু হয় আজ। এর মধ্যে ছয়টি জেলার সদর উপজেলায় ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হয়।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) এ ধাপে ১২২টি উপজেলার নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেছিল। কিন্তু এ ধাপে ১৫টি উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তিন পদেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ফলে ওই ১৫টি উপজেলার ভোটাররা ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি।
এ ছাড়া আদালতের আদেশ প্রতিপালনের জন্য চারটি ও অবৈধ প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে দুটি উপজেলার নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। আর তৃতীয় ধাপ থেকে স্থানান্তর করা ছয়টি উপজেলা এ ধাপে যোগ হয়েছে। সব মিলিয়ে ভোট হয় ১০৭ উপজেলায়।