ফাইল ছবি
মালয়েশিয়া সরকার একাধিকবার অবৈধভাবে বসবাসরত শ্রমিকদের বৈধ হওয়ার সুযোগ দিলেও এখনো হাজার হাজার শ্রমিক বৈধ হতে পারেননি। এসব অবৈধ শ্রমিকের ভাগ্য নির্ধারণে বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসছেন দেশটির নীতিনির্ধারকরা। দেশটিতে কর্মরত বিভিন্ন দেশের শ্রমিকদের ভাগ্যে আসলে কী ঘটতে পারে, তা নিয়েই কমিউনিটির মধ্যে চলছে গুঞ্জন।
কমিউনিটি নেতারা বলছেন, বিপদগ্রস্ত বাংলাদেশিদের পাশে সবার আগে বাংলাদেশ সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে। দেশটিতে চলমান সংকটে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে কারো বসে থাকার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে যত দ্রুত সম্ভব সক্রিয় ভূমিকা রেখে বিপদগ্রস্ত বাংলাদেশিদের দুর্দশা লাঘব সম্ভব বলে মনে করছেন তারা।
এছাড়া গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশিদের মুক্তি এবং কাগজপত্রহীন সব বাংলাদেশিদের সহজ শর্তে বৈধ করে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কমিউনিটি নেতারা। হাইকমিশনের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন এবং অবৈধদের বৈধতার আওতায় নিয়ে আসতে দেশটির সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে ব্যাপক ধরপাকড় অভিযানের মধ্যেই আশার আলোর দেখা মিলল মালয়েশিয়ার সাবাহ প্রদেশে। অবৈধভাবে অবস্থান করা বিদেশি শ্রমিকদের মধ্যে ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনের নাগরিকদের বৈধ হওয়ার সুযোগ।
এ দুই দেশের অভিবাসীদের বৈধ হওয়া শুরু হয়েছে চলতি এপ্রিল থেকে। শেষ হবে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরে। নামমাত্র ফি দিয়ে অবৈধদের বৈধ হওয়ার সুযোগ দেয়ার কারণে অবৈধ অভিবাসীরা এই সুযোগ গ্রহণ করবেন বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন সাবা প্রদেশের মন্ত্রী।
গত বছরের ৩১ আগস্ট থেকে ব্যাপক ধরপাকড় অভিযান শুরু করে অভিবাসন বিভাগ। গ্রেপ্তার করা হয় হাজার হাজার অবৈধ অভিবাসীদের। চলতি বছরেই গ্রেপ্তার করা হয় প্রায় ১৪ হাজার বিভিন্ন দেশের প্রবাসীদের। যার মধ্য বাংলাদেশি রয়েছে সাড়ে তিন হাজারেরও অধিক।
একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সাবা প্রদেশের পর মালয়েশিয়াজুড়ে চলতে পারে অবৈধদের বৈধ হওয়ার সুযোগ। এবারের অবৈধদের বৈধ হওয়ার প্রকল্পের কিছু কিছু সেক্টরকে উন্মুক্ত করতে পারে সরকার। সূত্রটি জানিয়েছে, যারা গতবার বৈধ হওয়ার জন্য ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং প্রতারণার শিকার হয়েছিল তাদের জন্য খোলা হতে পারে বৈধতার সুযোগ। এ সুযোগের আশায় প্রহর গুনছেন দেশটিতে বসবাসরত অবৈধ অভিবাসীরা।
এ দিকে গত বছরের আগস্ট মাসে বিদেশি কর্মীদের নীতিমালা প্রণয়নের জন্য মন্ত্রিপরিষদ কর্তৃক একটি স্বাধীন কমিটি গঠন করা হয়।
এ স্বাধীন কমিটি দীর্ঘ ৮ মাস পর্যবেক্ষণের মধ্য দিয়ে প্রতিবেদন মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করেছে। জাতীয় নীতি, নিয়োগ নীতি, কর্মসংস্থান নীতি, প্রত্যাবর্তন নীতি, অনথিভুক্ত শ্রমিকদের নিয়মিতকরণ, স্থায়ী ও উদ্বাস্তু এবং ন্যায়বিচার এই ৭টি প্রধান নীতির ওপর ভিত্তি করে এ রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। এ রিপোর্ট নিয়েই বৃহস্পতিবার বৈঠক হবে বলে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।