সেন্টমার্টিন
টেকনাফের সেন্টমার্টিন এলাকার নিরাপত্তায় ফের বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
রোববার সকাল থেকে ভারি অস্ত্রসহ বিওপি ক্যাম্প স্থাপনের লক্ষ্যে দ্বীপটিতে নিয়মিত মহড়া দেওয়ার পাশাপাশি সেন্টমার্টিনের বিভিন্ন এলাকায় টহল জোরদার করা হয়েছে।
এর আগে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত সেন্টমার্টিনে তৎকালীন বিডিআর (বাংলাদেশ রাইফেলস) মোতায়েন ছিল।
সেন্টমার্টিনের বিজিবি মোতায়েনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বাহিনীটির জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহাম্মদ মহসীন রেজা জানান, সেন্টমার্টিনের নিরাপত্তার জন্য বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। সেখানকার নিরাপত্তায় বিজিবির যতজন সদস্য দরকার সেই কজন মোতায়েন থাকবে।
তিনি বলেন, সেন্টমার্টিন থেকে বিভিন্ন সময় রোহিঙ্গা আটক করেছে কোস্টগার্ড, পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি। বিভিন্ন সময় ওই এলাকায় দস্যুতার ঘটনাও ঘটেছে। টেকনাফ থানার একটি ফাঁড়ি রয়েছে সেন্টমার্টিনে। তবে বর্তমান সরকার মনে করছে, সেন্টমার্টিনের নিরাপত্তায় বিজিবি মোতায়েন দরকার। তাই বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
টেকনাফ-২ নম্বর বিজিবির অধিনায়ক (ভারপ্রাপ্ত) সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ১৯৯৭ সালের আগ পর্যন্ত সেন্ট মার্টিন দ্বীপে বিজিবি ছিল। এরপর থেকে সেখানে বিজিবির কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এত দিন ধরে কোস্টগার্ড সদস্যরা ওই সীমানা পাহারা দিয়ে আসছিল। কিন্তু এবার সেন্টমার্টিনে বিজিবির একটি বিওপি স্থাপনের কার্যক্রম চলছে। তাই সেখানে টহল দিচ্ছে বাহিনীটি। এটা নিয়মিত টহলের অংশ।
মোস্তাফিজুর রহমান আরও জানান, প্রতিদিন বিজিবির সদস্যদের নিয়ে দ্বীপের বিভিন্ন এলাকায় মহড়া চলবে। তবে বিভিন্ন গণ্যমাধ্যমে ভারি অস্ত্রের যে খবর এসেছে তা সঠিক নয়। স্বাভাবিকভাবেই টহল করছে বিজিবি।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল হাসান বলেন, সীমান্ত সুরক্ষার জন্য কোস্টগার্ডের পাশাপাশি বিজিবিও কাজ করবে। তাই বিজিবি সেন্ট মার্টিনে টহল শুরু করেছে। বিওপি স্থাপনের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ। এতে করে সীমান্তে চোরাচালান, অবৈধ অনুপ্রবেশ, সীমান্তের নানা অপরাধ দমনে অনেকটা সহায়ক হবে।
এর আগে, গত বছরের অক্টোবরে সেন্টমার্টিনকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করেছিল মিয়ানমার। দেশটির জনসংখ্যা বিষয়ক বিভাগের ওয়েবসাইট সম্প্রতি তাদের যে মানচিত্র প্রকাশ করেছে, তাতে সেন্টমার্টিনকে তাদের ভূখণ্ডের অংশ দেখানো হয়। পরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিয়ানমারের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত উ লুইন ও’কে তলব করে এর প্রতিবাদ জানায়। এরপর মিয়ানমার মানচিত্র থেকে সেটি পরিবর্তন করে।
প্রসঙ্গত, কক্সবাজার সংলগ্ন প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন সৃষ্টি থেকে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের অন্তর্গত। ব্রিটিশ শাসনাধীন ১৯৩৭ সালে যখন বার্মা ও ভারত ভাগ হয় তখন সেন্টমার্টিন ভারতে পড়েছিল। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের সময় সেন্টমার্টিন পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে এটি বাংলাদেশের অন্তর্গত। ১৯৭৪ সালে সেন্টমার্টিনকে বাংলাদেশের ধরে নিয়েই মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা চুক্তি হয়।